বাংলাদেশে প্রথম মাস্টার কার্ড চালু করে কোন ব্যাংক
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন অনলাইনবাংলাদেশে প্রথম মাস্টার কার্ড চালু করে কোন ব্যাংক? আজকাল আমাদের প্রতিদিনের জীবনে একটি ছোট্ট প্লাস্টিকের কার্ড কতটা গুরুত্ব রাখে, সেটা আর আলাদা করে বলার দরকার নেই।
তবে জানেন কি, বাংলাদেশে প্রথম মাস্টারকার্ড চালু করা ব্যাংক কোনটি? আমি নিজেও এক সময় জানতাম না। তাই আজ জানবো কোন ব্যাংক মাস্টারকার্ড প্রথম চালু করে এবং আমাদের লেনদেন ব্যবস্থায় পরিবর্তন এনেছে। চলুন এ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিই।
আলোচ্য সূচীপত্র: বাংলাদেশে প্রথম মাস্টার কার্ড চালু করে কোন ব্যাংক এবং এর বিস্তারিত
- বাংলাদেশে প্রথম মাস্টার কার্ড চালু করে কোন ব্যাংক
- মাস্টার কার্ড কী ও কীভাবে কাজ করে
- বাংলাদেশে মাস্টার কার্ড চালু হওয়ার ইতিহাস
- স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের মাস্টার কার্ড চালুর সাল ও প্রেক্ষাপট
- মাস্টার কার্ড চালুর পর বাংলাদেশে লেনদেনের পরিবর্তন
- মাস্টার কার্ডের সুবিধা ও ব্যবহারযোগ্যতা
- অন্যান্য ব্যাংক কবে মাস্টার কার্ড সেবা চালু করে
- ডেবিট বনাম ক্রেডিট মাস্টারকার্ডের পার্থক্য
- বাংলাদেশে মাস্টার কার্ডের ভবিষ্যৎ
- আমার মন্তব্য
বাংলাদেশে প্রথম মাস্টার কার্ড চালু করে কোন ব্যাংক
আজ আমরা খুব সহজেই মাস্টার কার্ড দিয়ে অনলাইন শপিং করি, বিদেশে টাকা পাঠাই বা পস মেশিনে এক টাচে পেমেন্ট করি। কিন্তু আপনি কি জানেন, বাংলাদেশে প্রথম মাস্টার কার্ড চালু করে কোন ব্যাংক? আন্তর্জাতিক ব্যাংক ANZ Grindlays প্রথম MasterCard চালু করে ১৯৯৭ সালে। তবে স্থানীয় ব্যাংকের মধ্যে Standard Chartered Bank সর্বপ্রথম ১৯৯৬ সালে MasterCard চালু করে। (তথ্যসূত্র- www.business-standard.com & www.prothomalo.com দুটো লিংকে ক্লিক করুন।)
তৎকালীন বণিক বাংলাদেশ (বর্তমানে লংকাবাংলা) এবং ন্যাশনাল ব্যাংকও সেই সময়ে ক্রেডিট কার্ড চালু করেছিল। তবে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের মাঝে এই কার্ডের ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা আসে মূলত সিটি ব্যাংকের হাত ধরে। ২০০৯ সাল থেকে ব্যাংকটি আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ডের মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারে এক নতুন আস্থা ও জনপ্রিয়তার ধারা তৈরি করে। সময়ের পরিক্রমায় বর্তমানে দেশে প্রায় ২১ লাখ মানুষ ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করছেন আর ডেবিট কার্ড ব্যবহারকারীর সংখ্যা পৌঁছেছে প্রায় ৩ কোটিতে যা দেশের ব্যাংকিং সচেতনতা ও প্রযুক্তির অগ্রগতির একটি উজ্জ্বল উদাহরণ।
বাংলাদেশে মাস্টার কার্ড চালুর ইতিহাস আসলে কেবল একটি কার্ড উন্মোচনের গল্প নয় এটি দেশের ডিজিটাল অর্থনীতির দিকে এগিয়ে যাওয়ার এক দিকপাল পদক্ষেপ। এরপর একে একে অনেক সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংক মাস্টার কার্ড ইস্যু করতে শুরু করে।আজ প্রায় প্রতিটি প্রধান ব্যাংক মাস্টার কার্ড ইস্যু করে থাকে এবং এটি আমাদের দৈনন্দিন লেনদেনের অপরিহার্য অংশে পরিণত হয়েছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, এই মাস্টার কার্ড ব্যবস্থা শুধু আমাদের লেনদেনকে সহজ করেনি, বরং আন্তর্জাতিক দুনিয়ার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার সাহসও এনে দিয়েছে।
মাস্টার কার্ড কী ও কীভাবে কাজ করে
আজকের ডিজিটাল যুগে টাকা লেনদেনের ধরন অনেক বদলেছে। আর এই পরিবর্তনের একটা বড় অংশের পেছনে আছে মাস্টার কার্ড। আসলে মাস্টার কার্ড কি? এটা কীভাবে কাজ করে? এসব বিষয়ে আজ আমি সহজ ভাষায় আপনাদের সাথে আলোচনা করবো। চলুন জেনে নিই-
মাস্টার কার্ড কী?
একটা কথা পরিষ্কার করে নেওয়া ভালো—মাস্টার কার্ড কোনো ব্যাংক নয়। মাস্টার কার্ড হলো একটি আন্তর্জাতিক পেমেন্ট নেটওয়ার্ক, যার মাধ্যমে আপনি ব্যাংকের দেওয়া কার্ড ব্যবহার করে বিশ্বের যেকোনো জায়গায় কেনাকাটা, বিল পেমেন্ট বা টাকা লেনদেন করতে পারেন। এক কথায়, এটি এমন একটি প্রযুক্তি যা ব্যাংক, ক্রেতা ও বিক্রেতার মধ্যে অর্থ স্থানান্তরকে সহজ, দ্রুত ও নিরাপদ করে তোলে।
কীভাবে কাজ করে মাস্টার কার্ড?
- একটা উদাহরণ দিয়ে বলি, ধরুন আপনি একটি শপিং মলে গিয়ে মাস্টার কার্ড দিয়ে ৫,০০০ টাকা মূল্যের পণ্য কিনলেন। তখন যা ঘটে:
- বিক্রেতার POS মেশিন বা অনলাইন গেটওয়ে আপনার কার্ডের তথ্য সংগ্রহ করে।
- মাস্টার কার্ড সিস্টেম সেই তথ্য আপনার ব্যাংকে পাঠায় এবং দেখে নেয় আপনার অ্যাকাউন্টে পর্যাপ্ত টাকা আছে কি না।
- সব ঠিক থাকলে, ঐ টাকাটা বিক্রেতার ব্যাংকে পাঠিয়ে দেয়।
- আপনার অ্যাকাউন্ট থেকে নির্ধারিত পরিমাণ টাকা কেটে নেওয়া হয়।
- এই পুরো প্রক্রিয়াটি ঘটে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে, যা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে অনেক সুবিধা নিয়ে আসে।
বাংলাদেশে মাস্টার কার্ড সেবা চালু করে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের অবদান ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক, যা দেশের ব্যাংকিং খাতে ডিজিটাল লেনদেনকে নতুন দিশা দেখিয়েছে। স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের উদ্যোগে মাস্টার কার্ড ব্যবহারকারীরা বিদেশ ও দেশে সহজে এবং নিরাপদে লেনদেন করতে পারছে।
বাংলাদেশে মাস্টার কার্ড চালু হওয়ার ইতিহাস
ডিজিটাল পেমেন্ট ব্যবস্থার অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশেও আধুনিক ব্যাংকিং সুবিধাগুলো দিনে দিনে জনপ্রিয় হচ্ছে। এর মধ্যে মাস্টার কার্ড চালু হওয়া ছিল আমাদের দেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থায় একটি বড় পরিবর্তনের সূচনা। কিন্তু প্রশ্ন হলো, বাংলাদেশে প্রথম মাস্টার কার্ড চালু করে কোন ব্যাংক? এবং মাস্টার কার্ড চালুর ক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রথম ব্যাংকটি কী ভূমিকা রেখেছে?
বাংলাদেশে মাস্টার কার্ড সেবার যাত্রা শুরু হয় ১৯৭৭-এর শুরুতে। দেশীয় ব্যাংকগুলোর মাঝে প্রথম যে ব্যাংক মাস্টার কার্ড চালু করেছিল, সেটি ছিল স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক। তাদের উদ্যোগে বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক মানের পেমেন্ট কার্ড সেবা চালু হয়, যা আমাদের অর্থনৈতিক লেনদেনকে সহজ, দ্রুত ও নিরাপদ করে তোলে। মাস্টার কার্ড চালুর ক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রথম ব্যাংক হিসেবে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের অবদান অনেক যারা মাস্টার কার্ড ইস্যু করে সাধারণ গ্রাহকদের হাতে এই আধুনিক পেমেন্ট প্রযুক্তি তুলে দেয়।
ব্যাংকটির এই উদ্যোগ বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতের জন্য ছিল এক বিরাট মাইলফলক। এর আগে বাংলাদেশে শুধু নগদ লেনদেনের ওপর নির্ভরতা ছিল, আর বিদেশ থেকে টাকা আনা বা পাঠানোর ক্ষেত্রে সমস্যা ছিল। মাস্টার কার্ডের আগমন এই বাধাগুলো কমিয়ে দেয় এবং আন্তর্জাতিক লেনদেনকে সহজ করে তোলে।
স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের মাস্টার কার্ড চালুর সাল ও প্রেক্ষাপট
আজ আমরা যখন অনলাইনে সহজেই কেনাকাটা করি, আন্তর্জাতিক ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্মে উপার্জন করি কিংবা বিদেশে টাকা পাঠাই তখন হয়তো আমরা বুঝি না, এর শুরুটা কতটা সাহসী ছিল, কতটা ঐতিহাসিক ছিল। বাংলাদেশে মাস্টার কার্ড প্রথম চালু করে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক যা লোকাল ব্যাংক হিসেবে ১৯৯৬ সালে শুরু হয়। তখন দেশ ঠিকমতো সামলে উঠছে যুদ্ধবিধ্বস্ত অবস্থা থেকে। ব্যাংকিং ব্যবস্থায় আধুনিক প্রযুক্তির ছোঁয়া ছিল খুবই সীমিত। মানুষ তখনও ‘প্লাস্টিক মানি’ সম্পর্কে জানত না। ঠিক সেই সময়েই স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক মাস্টার কার্ড ইস্যু করে বাংলাদেশে প্রথম, যা ছিল এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ।
মাস্টার কার্ড চালুর পর বাংলাদেশে লেনদেনের পরিবর্তন
যখন বাংলাদেশে মাস্টার কার্ড চালু হয়, তখন থেকেই লেনদেনের ধরণে এক বড় ধরনের পরিবর্তন দেখা দেয়। আগে যেখানে শুধু নগদ টাকা বা চেকের ওপর নির্ভর করতে হতো, সেখানে মাস্টার কার্ডের মাধ্যমে লেনদেন হয়ে ওঠে অনেক সহজ, দ্রুত ও নিরাপদ। এই পরিবর্তনের পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান ছিল সেই ব্যাংকের, যে বাংলাদেশে মাস্টার কার্ড চালু করে কোন ব্যাংক আগে সেটি হলো স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক। তারা মাস্টার কার্ড চালুর মাধ্যমে দেশের ব্যাংকিং খাতকে আন্তর্জাতিক মানের ডিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত করে দেয়।
আরো পড়ুন: ২০২৫ সালে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ৫টি চমকপ্রদ আবিষ্কার
স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক মাস্টার কার্ড চালু করে কত সালে তা অবশ্যই জেনেছেন। সেসময় থেকেই মানুষ প্রথম জানতে পারে কীভাবে একটি ছোট্ট কার্ড দিয়ে দেশে-বিদেশে কেনাকাটা, বিল পরিশোধ, অনলাইন লেনদেন এমনকি এটিএম থেকে টাকা তোলা সম্ভব। মাস্টার কার্ড চালুর ফলে নগদ টাকার ওপর নির্ভরতা কমে, লেনদেন হয় কাগজহীন, ঝামেলাহীন এবং স্বয়ংক্রিয়। ব্যবসায়ীরা সহজেই পেমেন্ট নিতে শুরু করে, আর সাধারণ মানুষও আর্থিক নিরাপত্তা ও দ্রুততার স্বাদ পায়। এই বদল শুধু প্রযুক্তিগত নয়, বরং আমাদের দৈনন্দিন আর্থিক অভ্যাসেও প্রভাব ফেলেছে। ফলে এখনকার দিনে অনেকেই মাস্টার কার্ড ছাড়া দৈনন্দিন জীবন কল্পনা করতে পারেন না।
মাস্টার কার্ডের সুবিধা ও ব্যবহারযোগ্যতা
আজকের আধুনিক আর দ্রুতগতির জীবনে সময় বাঁচানো আর নিরাপদ লেনদেন আমাদের সবার চাওয়া। ঠিক তখনই মাস্টার কার্ড হয়ে উঠেছে বিশ্বস্ত আর্থিক সঙ্গী। এটি এমন একটি আর্ন্তজাতিক পেমেন্ট কার্ড, যার মাধ্যমে আপনি অনলাইনে বা সরাসরি কেনাকাটা, বিল পরিশোধ এবং বিদেশেও লেনদেন করতে পারেন সহজে, দ্রুত ও নিরাপদে। মাস্টার কার্ডের মূল সুবিধাগুলো হলো:
- নগদ টাকার প্রয়োজন কমে যায়: কাছে টাকা না থাকলেও মাস্টার কার্ড দিয়ে অনায়াসে শপিং, রেস্টুরেন্ট বিল বা অন্য পেমেন্ট করা যায়।
- আন্তর্জাতিক লেনদেনের সুবিধা: বিশ্বের হাজার হাজার দেশ ও দোকানে মাস্টার কার্ড গ্রহণযোগ্য। ভ্রমণ, বিদেশে পড়াশোনা বা অনলাইন কেনাকাটায় এটি দারুণ কার্যকর।
- নিরাপদ লেনদেন: চিপ ও পিন প্রযুক্তির কারণে মাস্টার কার্ডে প্রতিটি লেনদেন সুরক্ষিত। এতে জালিয়াতি বা হ্যাকিংয়ের ঝুঁকি অনেক কম।
- অনলাইন কেনাকাটায় সহজ পেমেন্ট: আজকের দিনে ই-কমার্স ছাড়া জীবন ভাবাই যায় না। মাস্টার কার্ড থাকলে সহজেই আপনি আপনার পছন্দের পণ্য কিনে নিতে পারেন যেকোনো অনলাইন স্টোর থেকে।
- ক্যাশব্যাক বা রিওয়ার্ড সুবিধা: অনেক ব্যাংক মাস্টার কার্ড ব্যবহারকারীদের জন্য দেয় বিশেষ ছাড়, পয়েন্টস, ক্যাশব্যাক বা রিওয়ার্ড সুবিধা।
- ATM থেকে টাকা তোলার সুবিধা: মাস্টার কার্ড থাকলে আপনি দেশের প্রায় সব এটিএম থেকেই টাকা তুলতে পারবেন চাই দিন হোক বা রাত।
আজ আমরা মাস্টার কার্ডের অনেক সুবিধা উপভোগ করছি। তবে বাংলাদেশে প্রথম মাস্টার কার্ড চালু করে কোন ব্যাংক সেটাও জানা জরুরী। এই প্রযুক্তি ও সুবিধা দেশের মানুষের হাতে প্রথম তুলে দেয় স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক। তাদের সেই সময়োপযোগী উদ্যোগের মাধ্যমেই বাংলাদেশে শুরু হয় আন্তর্জাতিক মানের ডিজিটাল ব্যাংকিং যুগ। তখন হয়তো আমরা কল্পনাও করিনি, একদিন ছোট্ট একটি কার্ড দিয়ে আমরা বিশ্বজুড়ে কেনাকাটা করব, টিকিট কাটব, বিল দেব।
অন্যান্য ব্যাংক কবে মাস্টার কার্ড সেবা চালু করে
বাংলাদেশে মাস্টার কার্ড প্রথম কোন ব্যাংক চালু করেছিল এবং কবে তা আমাদের এখন সবারই জানা। স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের পথ ধরেই পরে ধীরে ধীরে দেশের অন্যান্য বেসরকারি ও সরকারি ব্যাংকগুলোও মাস্টার কার্ড সেবা চালু করতে শুরু করে। একাধিক ব্যাংক ২০০৫ সালের পর থেকে মাস্টার কার্ড ইস্যু করা শুরু করে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ব্র্যাক ব্যাংক, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, সিটি ব্যাংক ইত্যাদি। এই ব্যাংকগুলো যখন মাস্টার কার্ড ইস্যু করা শুরু করে, তখন থেকেই সাধারণ মানুষের হাতেও পৌঁছে যায় আন্তর্জাতিক মানের ডিজিটাল পেমেন্ট সেবা। ব্যাংকিং সেবায় এই উদ্যোগ নগদ টাকার উপর নির্ভরতা কমায়, অনলাইন কেনাকাটা ও আন্তর্জাতিক লেনদেন সহজ করে এবং বাংলাদেশের ডিজিটাল অর্থনীতিকে একধাপ এগিয়ে দেয়।
ডেবিট বনাম ক্রেডিট মাস্টারকার্ডের পার্থক্য
আমরা অনেকেই মাস্টারকার্ড ব্যবহার করি, কিন্তু সবসময় বুঝে উঠি না ডেবিট মাস্টারকার্ড আর ক্রেডিট মাস্টারকার্ডের মধ্যে আসলে পার্থক্য কোথায়? চলুন সহজভাবে জানি।
ডেবিট মাস্টারকার্ড কী?
- ডেবিট মাস্টারকার্ড সরাসরি আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে সংযুক্ত থাকে।
- আপনি যত টাকা অ্যাকাউন্টে রাখবেন, ততটুকুই খরচ করতে পারবেন।
- অর্থাৎ এটা হলো আপনার নিজের টাকার কার্ড।
উদাহরণ: আপনার অ্যাকাউন্টে ১০,০০০ টাকা আছে, তাহলে আপনি ডেবিট মাস্টারকার্ড দিয়ে সর্বোচ্চ ১০,০০০ টাকার লেনদেন করতে পারবেন।
আরো পড়ুন: ভিসা কার্ড দিয়ে সর্বোচ্চ কত টাকা তোলা যায়
ক্রেডিট মাস্টারকার্ড কী?
- ক্রেডিট মাস্টারকার্ড হলো একটি ধরণের ঋণভিত্তিক কার্ড।
- এতে ব্যাংক আপনাকে নির্দিষ্ট পরিমাণ লিমিট পর্যন্ত ধার দেয়, যা আপনি পরে পরিশোধ করেন।
উদাহরণ: আপনার ক্রেডিট লিমিট ২০,০০০ টাকা তাহলে আপনি নিজের অ্যাকাউন্টে টাকা না থাকলেও সে পরিমাণ খরচ করতে পারবেন এবং পরে ব্যাংককে তা পরিশোধ করবেন।
তাই আমি বলবো বাংলাদেশে প্রথম মাস্টার কার্ড চালু করে কোন ব্যাংক বিষয়টি যেমন মাথায় আসে তেমনি এই কার্ড ব্যবহার এর উপকারিতা কিভাবে কাজ করে সে বিষয়েও সঠিক তথ্য ও জ্ঞান থাকা জরুরী।
বাংলাদেশে মাস্টার কার্ডের ভবিষ্যৎ
বর্তমান যুগে ডিজিটাল পেমেন্ট ব্যবস্থা দিন দিন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। বাংলাদেশেও নগদ অর্থের ব্যবহার কমছে আসছে আর কার্ড ও অনলাইন পেমেন্ট জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এই পরিবর্তনের পেছনে মাস্টার কার্ডের ভূমিকা অনস্বীকার্য। মাস্টার কার্ড বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রথম চালু করে কোন ব্যাংক এটা জানার পরে এটাও জেনে রাখুন আগামী দিনে বাংলাদেশে মাস্টার কার্ডের ভবিষ্যৎ অত্যন্ত উজ্জ্বল।
আমার মন্তব্য
স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক যখন মাস্টার কার্ড প্রথম চালু করে, তখন হয়তো আমরা অনেকেই জানতাম না এর ভবিষ্যৎ এত বিশাল হবে। আমরা আজ যে সহজ ডিজিটাল ব্যাংকিং সুবিধা ভোগ করি, তা একসময় ছিল কল্পনার বিষয়। স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডের মতো ব্যাংকের সাহসী পদক্ষেপের কারণেই আজ বাংলাদেশ বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারছে। মাস্টার কার্ড কেবল একটি কার্ড নয়—এটি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক আধুনিকায়নের একটি প্রতীক। আপনি যদি আধুনিক ব্যাংকিং সুবিধা পেতে চান, নিরাপদ ও সহজে লেনদেন করতে চান, তাহলে মাস্টার কার্ড ব্যবহার শুরু করুন। আমি মনে করি আপনি এতে শুধু সুবিধাই পাবেন না, সময় ও ঝামেলা থেকেও বাঁচবেন। সবশেষে বলব, উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে চলাই এখন সময়ের দাবি।
সংসার পেজের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url