অতিরিক্ত গরম থেকে বাঁচার উপায়
অতিরিক্তি মাসিক বন্ধের ঘরোয়া উপায়অতিরিক্ত গরম থেকে বাঁচার উপায় জানতে চাওয়া যেন এই গরমে আমাদের সবারই নিত্যদিনের প্রয়োজন। প্রতিদিনের জীবনযাত্রায় যখন সূর্য ঠিক যেন আগুন ঢালছে, তখন শরীর আর মনের ক্লান্তি দুটোই যেন বাড়ে।
আলোচ্য সূচিপত্র: প্রচন্ড গরমে সুস্থ থাকার উপায়
- অতিরিক্ত গরম থেকে বাঁচার উপায়
- পর্যাপ্ত পানি পান করুন
- হালকা ও ঢিলেঢালা পোশাক পরুন
- বাড়ির ভেতরে ঠান্ডা রাখার উপায়
- গরমের দিনে খাবার ব্যবস্থাপনা
- ঘরোয়া ঠান্ডা রাখার প্রাকৃতিক পদ্ধতি
- বাচ্চা ও বৃদ্ধদের যত্ন
- বাইরে যাওয়ার সময় সাবধানতা
- গরমে ঘুমের সমস্যা ও সমাধান
- আমার পরামর্শ
অতিরিক্ত গরম থেকে বাঁচার উপায়
অতিরিক্ত গরম থেকে বাঁচার উপায় বিষয়টা এখন আর শুধু বইয়ের ভাষা না বরং আমাদের বাস্তব জীবনের প্রতিদিনের কষ্ট। আমি নিজে যখন দুপুরবেলা অফিস থেকে বাড়ি যাই বা ঘরে থাকলেও বিদ্যুৎ চলে যায়, তখন গরমটা কী ভয়াবহ হতে পারে তা হাড়ে হাড়ে বুঝতে পারি। তাই অনেক খুঁজে খুঁজে, চেষ্টা করে কিছু সহজ কৌশল আমি নিজের জীবনে কাজে লাগিয়েছি, যেগুলো আপনাদের সাথেও শেয়ার করছি।
পর্যাপ্ত পানি পান করা গরমে বাঁচার সবচেয়ে জরুরি ও সহজ উপায় বলে আমি মনে করি। প্রতিদিন কমপক্ষে ৮-১০ গ্লাস পানি পান করি। আর মাঝে মাঝে লেবু পানি, শশার জুস খাওয়ার চেষ্টা করি। এতে শরীরের ভেতরের তাপমাত্রা একটু হলেও নিয়ন্ত্রণে থাকে। আমি হালকা রঙের ঢিলেঢালা সুতির জামা পরি। এতে শরীর একটু হলেও বাতাস পায়, ঘাম কমে, আর অস্বস্তিও কম হয়। ঘর ঠান্ডা রাখার জন্য দিনে পর্দা টেনে রাখি, জানালায় ভেজা পর্দা ঝুলিয়ে দিই আর যতটা সম্ভব ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি কম চালাই, কারণ সেগুলো গরম আরো বাড়িয়ে দেয়।
এসবের পাশাপাশি খাবার নির্বাচনে সাবধানতা জরুরি। তেল-মসলাযুক্ত, ভারী খাবার এড়িয়ে চলি, বরং ফলমূল, ডাবের পানি, শসা-তরমুজ জাতীয় ঠান্ডা খাবার খেতে চেষ্টা করি। এতে পেটও ভালো থাকে, শরীরও হালকা থাকে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, আমি গরমে অসুস্থতা এড়ানোর সহজ উপায় হিসেবে দুপুর ১২টা থেকে ৩টার মধ্যে বাইরে না যাওয়ার চেষ্টা করি। দরকার হলে ছাতা, সানগ্লাস আর পানির বোতল সঙ্গে রাখি।
পর্যাপ্ত পানি পান করুন
গরমের সময় আমাদের শরীর স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি পানি হারায়। ঘাম, প্রস্রাব, এমনকি নিশ্বাসের সাথে পানি বেরিয়ে যায়। আর এই পানি যদি ঠিকমতো পূরণ না করা হয়, তাহলে শুরু হয় মাথাব্যথা, দুর্বলতা, বমি ভাব আর শরীর শুকিয়ে যাওয়ার মতো সমস্যা। তাই গরমে অসুস্থতা এড়ানোর সহজ উপায় বলতে গেলে সবচেয়ে আগে যেটা বলব, সেটা হলো পানি, পানি, আর পানি!
আরো পড়ুন: অ্যালাট্রল ঔষধের কাজ, ব্যবহারবিধি ও সতর্কতা
আমার নিজের অভ্যাস হচ্ছে সকাল ঘুম থেকে উঠেই একটা বড় গ্লাস পানি পান করি। কাজের ফাঁকে ফাঁকে ছোট করে হলেও এক দুই চুমুক পান করতে থাকি। আর বাইরে গেলে অবশ্যই পানির বোতল সঙ্গে রাখি। মাঝে মাঝে লেবু পানি, ডাবের পানি কিংবা সামান্য ওরস্যালাইন খাই যেন শুধু পানি নয়, শরীরের লবণ-পানি ব্যালান্সও ঠিক থাকে।আপনিও চেষ্টা করুন দিনে অন্তত ৮-১০ গ্লাস পানি খেতে। আর যদি বাইরে কাজ করতে হয়, তাহলে তো কথাই নেই, পানির ওপর বেশি গুরুত্ব দিন। গরমে সুস্থ থাকার সবচেয়ে সহজ কিন্তু কার্যকরী অভ্যাস এটা। ছোট একটা পরিবর্তন, কিন্তু অনেক বড় উপকার।
হালকা ও ঢিলেঢালা পোশাক পরুন
গ্রীষ্মকালে অতিরিক্ত গরম থেকে শরীরকে সুস্থ রাখার উপায় হিসেবে হালকা ও ঢিলেঢালা পোশাক পরুন। এটা একটা কার্যকর অভ্যাস। আমি নিজেও আগে স্টাইল করতে যেয়ে গরমে টাইট ফিটিং বা গা-চাপা কাপড় পরতাম। কিন্তু তখন বুঝিনি, এতে শরীর ঠিকমতো ঘাম বের করতে পারে না আর গরম ভেতরেই আটকে যায়। পরে বুঝলাম ঢিলেঢালা আর হালকা রঙের সুতির কাপড় না পরলে শরীরের যেমন কষ্ট হয়, তেমনি নানা সমস্যা শুরু হয়। যেমন ঘামাচি, র্যাশ, ক্লান্তি, এমনকি হিট র্যাশ পর্যন্ত হতে পারে।
এখন আমি গরমের সময় শুধু হালকা সুতির জামা পরি। যেটা বাতাস চলাচল করতে পারে, ঘাম শোষে আর শরীরকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে। বিশেষ করে সাদা, হালকা নীল বা পাতলা হলুদের মতো রঙের পোশাক পরলে সূর্যের তাপ কম লাগে। আপনারও উচিত এই গরমে শরীরকে একটু মুক্তি দেওয়া। স্টাইল গুরুত্বপূর্ণ ঠিকই, কিন্তু শরীর সুস্থ থাকাটাই সবার আগে। গ্রীষ্মকালীন গরমে হালকা, ঢিলেঢালা পোশাকই হতে পারে সেই ছোট্ট পরিবর্তন, যা আপনাকে সারাদিন স্বস্তিতে রাখবে।
বাড়ির ভেতরে ঠান্ডা রাখার উপায়
গরমে বাইরে যেমন অসহ্য, অনেক সময় ঘরের ভেতরেও যেন আগুনের লেলিহান শিখা ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষ করে যাদের বাসায় এসি নাই বা বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার সমস্যা বেশি। তাদের জন্য ঘর ঠান্ডা রাখা যেন একটা চ্যালেঞ্জ। কিন্তু কিছু সহজ পদ্ধতি মেনে চললে অতিরিক্ত গরম থেকে বাঁচার উপায় হিসেবে ঘরও রাখতে পারেন তুলনামূলক ঠান্ডা ও আরামদায়ক।
আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলি প্রথমেই আমি চেষ্টা করি সকাল ১০টার আগেই জানালা-দরজা খুলে দিয়ে বাসায় ঠান্ডা বাতাস ঢোকানোর। এরপর দুপুরের দিকে যখন রোদ কড়া হয়ে যায় তখন সব জানালা বন্ধ করে দিই এবং ভারী রঙের পর্দা টেনে দিই যেন সূর্যের তাপ ঢুকতে না পারে। একটা পদ্ধতি দারুণ কাজ করে যদি আপনি ভেজা পাতলা পর্দা ব্যবহার করতে পারেন। আর সম্ভব হলে ছাদে বা টিনে পানি ছিটানো বা ছাদ ঢেকে রাখার উপায়টি ভালো কাজে দেয়।
ঘরের ভেতরে বেশি ইলেকট্রনিক জিনিস একসাথে চালানো থেকেও বিরত থাকুন, কারণ এগুলো গরম বাড়িয়ে তোলে। আর গ্রীষ্মকালে আমি সাধারণত আমার মা বা বউকে রান্না দুপুরে না করে সন্ধ্যার দিকে করতে বলি, যাতে রান্নাঘরের তাপ পুরো ঘরে ছড়িয়ে না পড়ে। এই ছোট ছোট পরিবর্তনগুলো আমার জীবনে বিশাল স্বস্তি এনে দিয়েছে। আপনি চাইলেও খুব সহজে এগুলো অনুসরণ করে গ্রীষ্মকালে অতিরিক্ত গরম থেকে শরীরকে সুস্থ রাখার উপায় হিসেবে নিজের ঘরটা শান্তির জায়গা করে তুলতে পারেন।
গরমের দিনে খাবার ব্যবস্থাপনা
গরমের দিনে আমাদের শরীর খুব সহজেই দুর্বল হয়ে পড়ে। একটা ছোট ভুল খাবার বেছে নেওয়া মানেই হতে পারে পেটের গন্ডগোল, হজমের সমস্যা এমনকি হিটস্ট্রোকের আশঙ্কা। আমার অভিজ্ঞতায় গরমে অসুস্থতা এড়ানোর সহজ উপায়গুলোর মধ্যে খাবারের সঠিক বাছাই গুরুত্বপূর্ণ। এসময় আমি যতটা পারি হালকা খাবার খাই। যেমন ভাতের সঙ্গে পাতলা ডাল, শাক-সবজি, টক দই আর প্রচুর শসা বা তরমুজ। এগুলো শরীরকে ঠান্ডা রাখে, পানি ঘাটতি পূরণ করে আর হজমেও সহায়ক।
আরো পড়ুন: কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
ভাজাপোড়া, অতিরিক্ত তেল-মসলা দেওয়া খাবার, ঝাল-ঝোলা এসব খাবার গরমে পুরোপুরি এড়িয়ে চলবেন। এগুলো শরীরে অতিরিক্ত গরম তৈরি করে, যার ফলে ঘাম বাড়ে, দুর্বলতা আসে। বিশেষ করে দুপুরে ভারী খাবার খেলে বিকেল পর্যন্ত শরীর ক্লান্ত থাকে। এছাড়া পানি জাতীয় ফল যেমন তরমুজ, বাঙ্গি, ডাবের পানি এগুলো নিয়মিত খাওয়ার চেষ্টা করুন। মাঝে মাঝে লেবু পানি বা ঠান্ডা দইয়ের শরবতও বানিয়ে খেতে পারেন। এগুলো শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতে সাহায্য করে।
গরমের দিনে খাবার মানে শুধু পেট ভরানো না, এটা শরীরকে ঠান্ডা রাখা, রোগ প্রতিরোধ করা আর সারাদিন চাঙা থাকার একটি বড় মাধ্যম। তাই আপনার খাবারের পছন্দেই লুকিয়ে আছে গরমে অসুস্থতা এড়ানোর সহজ উপায়। একটু সচেতন হলেই গরমের কষ্ট অনেকটাই কমে যেতে পারে।
এসি ছাড়াই ঘর ঠান্ডা রাখার প্রাকৃতিক পদ্ধতি
গরমে এসি চালানো সবসময় সম্ভব না। বিশেষ করে যখন লোডশেডিং বাড়ে বা বিদ্যুতের খরচ বেড়ে যায়। আমি নিজের বাসায় তাই বরাবরই কিছু প্রাকৃতিক পদ্ধতি অনুসরণ করি, যেগুলো সত্যি বলতে বেশ ভালো কাজ করে। এগুলো শুধু অতিরিক্ত গরম থেকে বাঁচার উপায় নয় বরং পরিবেশবান্ধবও বটে। প্রথমেই আমি ঘরের ভেতর বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা করে রাখি। যেমন উল্টো দিকের জানালা খুলে রাখলে ক্রস ভেন্টিলেশন হয়, ফলে গরম বাতাস বের হয়ে যায়, ঠান্ডা বাতাস ঢোকে।
পানিতে ভেজানো পর্দা বা কাপড় জানালায় ঝুলিয়ে দিলে বাইরের বাতাস একটু ঠান্ডা হয়ে ঘরে ঢোকে। মাঝেমধ্যে ঘরের কোণায় এক বালতি পানির মধ্যে লেবু, তুলসি বা পুদিনা পাতা ভিজিয়ে রেখে দিই। এতে হালকা ঠান্ডা ভাব পাওয়া যায় আর মন ভালো করা গন্ধ তৈরি হয়। আরেকটা মজার পদ্ধতি আমি ব্যবহার করি মাটির কলসিতে পানি রেখে সেই পানি ঘরের চারদিকে ছিটিয়ে দেওয়া। এতে ঘরের তাপমাত্রা অল্প সময়েই নেমে আসে।গ্রীষ্মকালে অতিরিক্ত গরম থেকে শরীরকে সুস্থ রাখার উপায় হিসেবে বারান্দা আর জানালার পাশে আমি অনেক সবুজ গাছ লাগিয়েছি। এগুলো শুধু ঘর ঠান্ডা রাখে না, মানসিক প্রশান্তিও দেয়। এসব ছোট ছোট ঘরোয়া কৌশল আপনাকে অনেক বড় স্বস্তি এনে দিতে পারে। শুধু সচেতন হলেই আমরা এই গরমেও আরাম করে দিন কাটাতে পারি, কোনো যান্ত্রিক কষ্ট ছাড়াই।
বাচ্চা ও বৃদ্ধদের যত্ন
গরমকালে বাচ্চা ও বৃদ্ধদের সবচেয়ে বেশি কষ্ট হয়। ওদের শরীর সহজেই তাপ সহ্য করতে পারে না। আর অনেক সময় নিজেরা বুঝতেও পারে না কখন শরীর খারাপের দিকে যাচ্ছে। তাই একজন সচেতন অভিভাবক হিসেবে আমি যেটা সবচেয়ে গুরুত্ব দিই, সেটা হলো ওদের বিশেষ যত্ন নেওয়া। এটা শুধু দায়িত্ব না বরং গরমে অসুস্থতা এড়ানোর সহজ উপায় এবং অতিরিক্ত গরম থেকে বাঁচার উপায় হিসেবে খুবই কার্যকর।
আমি বাচ্চাদের জন্য যেসকল দিক খেয়াল রাখি-
- আমি কখনোই ওদের খালি পেটে বাইরে যেতে দিই না।
- মাথায় সাদা বা হালকা রঙের ক্যাপ পরিয়ে রাখি আর সঙ্গে পানির বোতল দিয়ে দিই।
- ঠান্ডা জায়গায় খেলতে বলি, আর গরমে বাইরে খেলতে একদম নিষেধ করি।
- ঠান্ডা খাবার যেমন দই, ফলের রস, তরমুজ ইত্যাদি খাওয়ানোর চেষ্টা করি।
- গ্রীষ্মকালে সুস্থ থাকার উপায় হিসেবে শিশুরা যেন রোদে না যায় এবং পর্যাপ্ত পানি খায় সেদিকে যত্নবান হতে হবে।
বৃদ্ধদের জন্য যেসব কাজ করে থাকি-
- অনেক সময় তারা বেশি পানি খেতে চান না। ছোট ছোট চুমুক দিয়েও যেন পানি পান করেন, সেটা মনে করিয়ে দিই।
- ঘরের ভেতর বাতাস চলাচল নিশ্চিত করি। তাদের বিছানা বা চেয়ার এমন জায়গায় রাখি যেখানে সরাসরি রোদ আসে না।
- ওদের পোশাকে যেন হালকা আর ঢিলেঢালা কাপড় থাকে সেদিকেও খেয়াল রাখি।
- ওষুধ খাওয়ার সময় যেন গরমে ক্লান্ত না হয়ে পড়ে, সে জন্য খাওয়ার আগে শরবত বা ঠান্ডা পানীয় খেতে বলি।
সব মিলিয়ে বললে ওদের যত্ন একটু বাড়তি হলেও এটা আমাদের ভালোবাসার জায়গা থেকে নিতেই হবে। আর এই যত্নই গরমে বড় বিপদকে ঠেকিয়ে রাখতে পারে। তাই আসুন সবাই মিলে বাচ্চা ও বৃদ্ধদের একটু বেশি খেয়াল রাখার চেষ্টা করি এই গরমে।
বাইরে যাওয়ার সময় সাবধানতা
গরমকালে বাইরে যাওয়া যেন একেকটা চ্যালেঞ্জ। রোদের তাপ, ধোঁয়া, ঘাম আর ক্লান্তি সব মিলিয়ে শরীর আর মন দুটোই কাহিল হয়ে পড়ে। তাই আমি চেষ্টা করি কিছু সাবধানতা মেনে চলতে, যেগুলো সত্যি বলতে গ্রীষ্মকালে অতিরিক্ত গরম থেকে শরীরকে সুস্থ রাখার উপায় হিসেবে বেশ কাজে দেয়। আমি দুপুর ১২টা থেকে ৩টার মধ্যে বের না হওয়ার চেষ্টা করি। কারণ তখন সূর্য ঠিক মাথার উপর থাকে।
আরো পড়ুন: ওজন কমাতে জিরা পানির উপকারিতা
কিন্তু যদি খুব দরকার হয়, তাহলে-
- মাথায় টুপি বা ছাতা রাখি, আর চোখে সানগ্লাস। এই দুটো জিনিস অনেকটা রোদের কষ্ট কমিয়ে দেয়।
- হালকা ও ঢিলেঢালা সুতির কাপড় পরে বের হই, যাতে শরীর সহজে ঘাম বের করতে পারে।
- বের হওয়ার আগে অবশ্যই এক বোতল পানি বা গ্লুকোজ নিয়ে নিই, যেন শরীর ডিহাইড্রেট না হয়ে পড়ে।
- আমি সাধারণত বাইরে বের হওয়ার আগে এক গ্লাস লেবু পানি খেয়ে নিই, এটা শরীর ঠান্ডা রাখে আর ক্লান্তি দূর করে।
আমার অভিজ্ঞতায়, একটু সচেতন থাকলেই এই প্রচণ্ড গরমেও বাইরে কাজ শেষে ভালোভাবে বাড়ি ফেরা সম্ভব। কারণ নিজের শরীরের যত্ন নেওয়াটাই তো সবচেয়ে বড় বুদ্ধিমানের কাজ, তাই না?
গরমে ঘুমের সমস্যা ও সমাধান
গরমকালে রাতে ঘুমানো যেন একটা যুদ্ধ, ঘাম, অস্বস্তি আর বিদ্যুৎ না থাকলে তো কথাই নেই। অনেক সময় দেখা যায়, সারাদিন ঠিকঠাক গেলেও ঘুম ভালো না হলে পরের দিন কষ্টের হয়ে যায়। তাই নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলি, অতিরিক্ত গরম থেকে বাঁচার উপায় হিসেবে রাতে ঘুম ভালো করার কিছু ছোট কিন্তু কার্যকরী উপায় আমি নিয়মিত মেনে চলি। ঘুমানোর আগে আমি সাধারণত হালকা গরম পানিতে হাত-পা ধুয়ে নিই বা গোসল করি, এতে শরীর ঠান্ডা হয়ে যায়।
- সুতির পাতলা চাদর আর বালিশ ব্যবহার করি যেন ঘাম না ধরে।
- জানালা খোলা রাখি যেন বাতাস চলাচল করে।
- মাঝে মাঝে ফ্যানের সামনে ভেজা কাপড় ঝুলিয়ে রাখি, এতে বাতাস ঠান্ডা লাগে।
- খাওয়ার পর হালকা হাঁটাহাঁটি করে নিই, যাতে শরীর হালকা থাকে এবং ঘুম ভালো হয়।
এসব ছোট ছোট অভ্যাসই গ্রীষ্মকালে অতিরিক্ত গরম থেকে শরীরকে সুস্থ রাখার উপায় হিসেবে দারুণ কাজ করে। আর ঘুমটা যখন আরামদায়ক হয়, তখন পরের দিনটাও ভালো কাটে।
আমার পরামর্শ
আমার মতে অতিরিক্ত গরম থেকে বাঁচার উপায় খুঁজতে গিয়ে আমরা অনেক সময় শুধু বাহ্যিক জিনিসের ওপর নির্ভর করি যেমন এসি, কুলার, ঠান্ডা পানীয় ইত্যাদি। কিন্তু আসল ব্যাপারটা হলো নিজেদের দৈনন্দিন অভ্যাস আর শরীরের প্রতি সচেতনতার উপর।
আরেকটা জিনিস যেটা আমি মনে করি খুব দরকারি সেটা হলো সবার নিজের মতো করে গরম সামলানোর উপায় খুঁজে নেওয়া। কারও জন্য গোসল বেশি কাজে দেয়, কারও জন্য ঘরের পরিবেশ ঠিক রাখা। তাই নিজের শরীরের সংকেত বুঝে কাজ করাটাই সবচেয়ে বড় বুদ্ধিমানের হবে। আমি যেভাবে চেষ্টা করছি সুস্থ থাকতে, আপনিও চেষ্টা করুন নিজের ও পরিবারের যত্ন নিতে। অতিরিক্ত গরমে সুস্থ থাকার উপায় মেনে চললে আমরা নিজেরা যেমন সুস্থ থাকতে পারব, তেমনি প্রিয়জনদেরকেও সুস্থ রাখতে পারব।
সংসার পেজের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url